১৩ সেপ্টেম্বর নাটোরের অবিসংবাদিত নেতা শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী

0
314

নাটোরের অবিসংবাদিত জননেতা শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী

নাটোর কণ্ঠ:
নাটোরবাসীর ছায়া, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।নাটোরের মাটি ও মানুষের সন্তান ,ক্ষণজন্মার জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ অবিসংবাদিত নেতা ১৯২৬ সালের ৪ মার্চ সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ভাবনী গ্রামে এক জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহণ করে। তার বাবা জ্ঞানদা গোবিন্দ চৌধুরী ছিলেন নাটোর ভাবনীর জমিদার এবং বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সময়কার গ্র্যাজুয়েট।
শংকর গোবিন্দ চৌধুরী ১৯৪৫ সালে বগুড়ার আদমদীঘি হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে উচ্চশিক্ষার্থে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে বিএসসিতে অধ্যয়নকালে ভারত বিভক্তির সময় নানা প্রতিকূল পরিবেশে তার শিক্ষাজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৫৪ সালে তিনি মহীয়সী নারী অনিমা চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৫৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং এরশাদের শাসনামলে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের দায়ে তাকে এক বছর কারাবরণ করতে হয়। বঙ্গবন্ধুর কাছের মানুষের একজন ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। শংকর গোবিন্দ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৭ নম্বর সেক্টরের জোনাল কাউন্সেলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি একাধিকবার নাটোর পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নাটোর সদর আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার সিএমএইচে তিনি পরলোকগমন করেন।নাটোরের সব ধর্মের মানুষের প্রিয়জন। অন্যের দুঃখে তিনি হতেন ব্যথিত। বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে ছুটে যেতেন। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের কাছেও তিনি ছিলেন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। তার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গণে এনে দেয় শূন্যতা।
নাটোরে রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন। নাটোর রানী ভবানী মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, নাটোরের বনলতা হাইস্কুল, বড়গাছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়,শহীদ সোহরাওয়ার্দী উচ্চ বিদ্যালয়সহ নাটোরের ডায়াবেটিক সেন্টার সহ বহু প্রতিষ্ঠান তারই অক্লান্ত প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে। তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে প্রিয় ছিলেন। তিনি আমৃত্যু নাটোরবাসীর সেবায় কাজ করেছেন। নাটোরবাসী অনেক প্রিয় একটি নাম ” শংকর কাকা”। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সুযোগ্য কন্যা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং নাটোর পৌরসভার সুযোগ্য মেয়র উমা চৌধুরী জলি জনগনের সেবায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
নাটোরের গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা প্রয়াত শংকর গোবিন্দ চৌধুরীকে ২০১৮ সালে স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর‍) এ ভূষিত হোন । আজকের দিনে নাটোর তথা উত্তরবঙ্গের গণমানুষের নেতা শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ।।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে বিএডিসি বীজ ও সার ডিলার এসোসিয়েশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত
পরবর্তী নিবন্ধবিভূতিভূষণ ও জীবনানন্দ – গৌতম মিত্র

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে