“অতি অভিপ্রায়ে যখন প্রযুক্তি হয় অভিশাপ”-আজিজা রুপা

0
606
www.natorekantho.com

অতি অভিপ্রায়ে যখন প্রযুক্তি হয় অভিশাপ।

একদা মানুষ হেঁটে দূরদূরান্তের গন্তব্য এ যেত। মানুষের ব্যায়াম হত। মানুষ মুক্ত বিশুদ্ধ বাতাস পেত। অনেক দিন সুস্থভাবে বাঁচতো। তারপর মানুষ ঘোড়ার গাড়ি বানালো। সেটা পর্যন্ত ঠিক ছিল। তারপর মানুষ সময় বাঁচাতে ইঞ্জিন আবিস্কার করলো। আর মানুষ এত দ্রুতবেগি হল যে খুব দ্রুত মানুষ পৃথিবী ছেড়েই চলে যায়।

কালো ধোঁয়ায় রোগ আক্রান্ত হয়ে কিংবা চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে। কিন্তু মানুষ কাজের গন্তব্যে আর ঠিক মত পৌঁছতে পারেনা। জ্যাম লাগিয়ে রাস্তায় কাটিয়ে দেয় জীবনের অনেকগুলো সময়। আর এটা হল মানুষের অতি অভিপ্রায়ের ফল। উন্নতশীল দেশের মানুষ ভাবলো অনেক বেশি ইঞ্জিচালিত গাড়ি হলে আমরা আরো বেশি দ্রুতগামি হব। কিন্তু হায় আমরা হয়ে গেলাম স্থবির আর অস্থির।

একদা মানুষ মনের কথা বলতে লিপি আবিস্কার করলো, দেয়ালে আঁকতো। তা পরে লিখাতে পরিণত হল এবং তা চিঠিতে রুপ নিল। তারপর মানুষ দূত বা পায়রার পায়ে সে চিঠি বেঁধে দিত। তা পেয়ে প্রিয়জন বিমুগ্ধ হত। চোখ বন্ধ করে আর চিঠির ঘ্রাণ নিয়ে প্রিয়জনের ছোঁয়া অনুভব করতো, সুখানুভূতিতে ভরে উঠতো।

তারপর মানুষ টেলিফোন আর ওয়্যারলেস এ প্রিয়জনের কন্ঠ শুনতো। তার জন্যও অপেক্ষা করতে হত। আর সেই অপেক্ষাতেই সুখ ছিল। আবেগ ছিল। তারপর যখন মোবাইল আসলো। মানুষ ভালোই ছিল ১০ টাকা দিয়ে কথা বলতো।

তারপর এক টাকা/ ত্রিশ পয়সা যখন কথার দাম হল মানুষ হাওয়ায় সব টাকা উড়িয়ে দিতে লাগলো কিন্তু আবেগ আর ভালোবাসা ভিন্নরুপ নিতে লাগলো। তারপর ইন্টারনেট এসে দূরত্বকে গিলে খেল। পাশের মানুষ তার সঙ্গ হারালো। রক্তে মাংসে গড়া মানুষটা মোবাইলে স্থবির হল।

ম্যাসেঞ্জারের ওপাশটা বেশি রহস্যময় হয়ে উঠলো। মনোযোগ কেড়ে নিল। পাশের মানুষটা নিঃসঙ্গ হল। প্রযুক্তি অতি অভিপ্রায়ে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ালো। তাই অতি অভিপ্রায় কখনো ভালো নয়। অতিঅভিপ্রায় কমালে পৃথিবী এবং নিজে হয়ে উঠবেন সুন্দর ও শান্তিময়।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবি আতিক কাজী’র পাঁচটি কবিতা
পরবর্তী নিবন্ধ“বস্ত্রহরণ “-অনুপম সৌরিশ সরকারের কবিতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে