“আমি বরিশালের বাঙাল, কোন বিদেশী নই !!” – নচিকেতা চক্রবর্তী।
শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী তার গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত কাটাখালী নদীতে নেমে জল স্পর্শ করেন এবং বোতলে ভরে জল নিয়ে চলে গেলেন কলকাতায়।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিক কাউকে কিছু না জানিয়ে হুট করেই মা,মাটি ও ভিটের টানে বাংলাদেশের বরিশালে এলেন রঞ্জন চক্রবর্তীর পুত্র বিখ্যাত সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। মানুষ যেমন পূণ্যের আশায় তীর্থে গমন করে তেমনি নাড়ীর টানে পৈতৃক ভিটা দেখতে এসেছিলেন বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী।বৃহত্তর বরিশালের ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার নিভৃত পল্লী চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের উত্তর চেঁচরী গ্রামেই শিল্পীর শেকড়।
সাতচল্লিশে দেশ ভাগের আগেই দেশ ছেড়ে যায় নচিকেতার পরিবার। তাদের ফেলে যাওয়া শূন্য ভিটায় মরিয়ম বেগম নামে এক নারী বসবাস করছেন। সেই জীর্ণ কুটিরে অবনত মস্তকে মাটির ওপরেই বসে পড়েন নচিকেতা। ১০ মিনিট নীরবে বসে থাকেন। এ সময় শিল্পীর দু’চোখ বেয়ে নেমে আসে অশ্রুধারা। তার চোখে জল দেখে উপস্থিত অনেকেই অশ্রু ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন।
কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা বলেন, ১৯৪৫-৪৬ সালের দিকে আমার দাদু ললিত মোহন চক্রবর্তী ভারতে চলে যান। আমার বহুদিনের আশা এই ভিটায় আসার। আজ সে আশা পূরণ হলো।
তার গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত কাটাখালী নদীতে নেমে জল স্পর্শ করেন এবং বোতলে ভরে জল নিয়ে গেলেন কলকাতায়।
পৈতৃক জমি উদ্ধারের কোন চিন্তা নেই চিন্তা তার নেই। ভিটে-মাটি দখল হয়েছে, তা নিয়েও নেই কোন ক্ষোভ। শুধু জানালেন, তার পৈতৃক জমিতে যদি একটা হাসপাতাল হতো তাতেই তিনি সবচেয়ে খুশি হতেন।।
পিতৃভূমি ত্যাগ করার মুহূর্তে নচিকেতা চক্রবর্তী বলছিলেন,
“আমি বরিশালের বাঙাল, কোন বিদেশী নই !! ”
“যখন সময় থমকে দাঁড়ায়,
নিরাশার পাখি দু’হাত বাড়ায়,
খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোন,
কি আর করে তখন –
স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখে মন।” ….
সূত্র- Apurba das Apu দাদার ফেসবুক ওয়াল থেকে নেওয়া।