কবি দেবাশীষ সরকার‘এর একগুচ্ছ কবিতা

0
332
Debashish Sarker

কবি

কবিরা জন্মায় না, জন্ম হয়ে যায়,
অনাদর অবহেলার তুমুল ঝড়ে,
কবিতার ছন্দময় হেঁটে যাওয়া ক্ষনে,
নরম হাতের ছোঁয়ায়, প্রতিবাদে – প্রতিরোধে
ঘৃনায় জন্ম নেয় কবি,
জলটুন্গি ঘাটের নরম রোদ তখন কবিতার উপমা,
খিচুড়ির মোহময় গন্ধে জেগে উঠে প্রমীক সত্ত্বা।
ব্রজসুন্দরীর দাতব্য ঔষুধ যখন বিক্রি হয়
দোকানে দোকানে তখন কবিতারা ঘুমিয়ে যায়,
ভালোবাসার খেয়ালি সুখে, রক্তে ভেজা অপেক্ষার প্রহরে,
শুধু শব্দের খেলায় সুত্র খুঁজে খুঁজে হয়রান হয় ভুল সমিকরনে।
তখন পূর্নিমার চাঁদ পরকিয়ার জলে ভেসে ভেসে
কালবৈশাখী ঝঞ্জায় বিক্ষিপ্ত হৃদয়ে সুখ চেয়ে চেয়ে
ব্যার্থ হয় প্রযুক্তি পাতায়,
তবুও সত্যি কবিরা জন্মায় না জন্ম হয়ে যায়।
তবু কেন ঢাক ঢোল পিটিয়ে দশকে শতকে
হাঁকে ডাকে আবদ্ধ কবির দল জন্ম নেয় কেন?

মিথ্যের রকমফের

কপট সাধুর একচোখা আদর্শের বুলিতেও
অসাধারণ কাব্যের ছবি আঁকা হয় গোধুলীর পড়ন্ত আলোয়..
কি অসম্ভব! কি দুর্দান্ত সব উপমা ছড়িয়ে,
রঙের ঝালোরে মুড়িয়ে প্রকাশিত হয়
কুটিল চরিত্রের আলোকোজ্জ্বল সফেদ রূপ!
আর মর্মান্তিক সত্যগুলো মিথ্যার রকম ফেরে রঙ বদলায়।
দলাদলির চাপে সুন্দরও চলে যায় অসুন্দরের দলে,
মিথ্যার আশ্রয়ে খুঁজে নেয় সুখ, সত্যের পথিক।
কিন্তু যুক্তির যৌক্তিকতা তো ভিন্ন অর্থে
প্রকাশিত হয় রাজা আর নির্যাতিতের কাছে!
সময় বদলে যায়! রাজা তো রাজা নয়! ছিলোই না কোন কালে!
বাঘের ছালে ছিলো বিড়াল, ছিলো কুকুর।
কোকিল তবুও গায় গান মিথ্যের করা সুরে!
করুক না গান কপট তানে! তাতে কার কিবা আসে যায়!
স্তব্ধ রাতের আঁধার কেটে আলো আসে সত্যের উঠোনে..
কিংবা হয়তো আসবে…..

প্রথম সকাল

বিজ্ঞাপনী চায়ের ঘ্রাণে মিশে যায় বৃষ্টির স্বাদ,
পত্রিকার পাতায় লেগে থাকে স্ফিত ঠোঁটের হাসি,
কেনাকাটার ধুমে ঈদ আনন্দে মাতোয়ারা
তরুনের চোখ এড়িয়ে মধ্যবিত্তের নাভিস্বাস উঠাবার অপেক্ষায়
বিশিষ্টজনের হা হুতাশ তখন সদ্য বাজটের উত্তাপে।
বুড়ো ভামের হলবলি বোয়াল মাছের হাসি আর উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা;
চিকন সেমাইয়ের সুস্বাদের শুদ্ধতার নিশ্চয়তায়।
স্বল্প বসনার কটাক্ষে তুলনাহীন প্রথমপাতার স্বাদ শেষে দেখি
আহবান স্বজনপ্রীতি বন্ধের জন্য নাকি হবে আইন।
ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, কনডমের স্বাস্থ্য বার্তার উপড়ে
বিদেশ যাত্রার ছায়াচিত্রে কেউ কেউ লাশ হয়ে যায় নামাজের আগেই।
চোখে না পড়া সিমেন্ট আর শিতল বতাসের কান্নায়
আগ্রহ হারিয়ে যায় ২৫ ঘন্টায় দিন হবার আশা।
টপে তখন অপেক্ষা আর মাত্র ৫ দিন…

মৌনতা নাকি মগ্নতা..!

টাটকা বিকেলের গভীর লাল সূর্য,
অনেক দূরের অন্ধকারের ছবিটাকে স্পস্ট করে তুলেছে।
শেষ পাখিটাও হয়তো ঘরে ফেরার অপেক্ষায়।
আড়মোরা ভেঙ্গে বাক খাওয়া মোরগের মতো সাহসী পদক্ষেপে
গবেষণাগার থেকে বেড়িয়ে আসছে ওরা, খুব নিঃশব্দে।
আর আমি..! হা হা হা হা , স্বপ্নচারিণীর সুখের কান্নায়
আজ আলোর পথে ফিরতে গিয়ে লুকোচুরি খেলতে হয়
নিজেরই সাথে, নতুন পথ কি নতুন স্বপ্ন দেখায়..? কি জানি !
আমার তো মন বলছে রাজ্যের সকল অন্ধকার
তোমার মায়াবী চোখের কোনে স্থির হয়ে আছে।
বিজ্ঞান বলয়ের নৈঃশব্দ্যের নীলাভ সূর্যাস্ত
আরো বিষণ্ন করে তোলে আলোর পথযাত্রীকে।
তাই বুঝি প্রতিজ্ঞারা আজ ঘুমিয়ে পড়েছে,
আশা আর প্রত্যয় এক বিশাল প্রশ্নবোধকের সামনে
মৌন- ক্লান্ত- অসহায়…….তবে প্রত্যয়ী স্বপ্নদের কি হবে..?

Advertisement
উৎসDebashish Sarker
পূর্ববর্তী নিবন্ধ৭ জনের পর নাটোরে আরো দুজন করোনা আক্রান্ত, সিংড়ায় উপসর্গ নিয়ে ১ জনের মূত্যু
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরের নলডাঙ্গায় চিনাবাদাম চাষে সাফল্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে