গুরুদাসপুরে বছরে ৮ মাস জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকে মাদ্রাসাটি

0
321

গুরুদাসপুর, নাটোর কণ্ঠ: নাটোরের গুরুদাসপুরের আলিপুর দাখিল মাদরাসা। জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকে বছরের ৮ মাস। মাঠের নিচু জায়গা ও অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খনন করার কারনে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রায় ২০ বছর যাবৎ বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করিয়ে আসছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানাযায়, ১৯৬৭ সালে উপজেলা সদর হতে ২৪ কি.মি পশ্চিমে আহম্মেদপুর-বড়াইগ্রাম সড়ক সংলগ্ন আলীপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় এ বিদ্যালয়টি। তৎকালীন সময়ের মরহুম আলহাজ্ব আব্দুল কাদের মুন্সি ও তার ছোট ভাই মরহুম ইব্রাহীম আধাম এলাকার অবহেলিত মানুষদের ধর্মীয় শিক্ষার কথা চিন্তা করে সমাজকে সু-শিক্ষিত করে দেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার লক্ষে নিজেদের এক একর জমির ওপর মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের প্রথমে ফোরকানীয়া পাঠদান করানো হতো। প্রতিদিন সকালে সকালে এই পাঠদান করানো হয়েছিলো। পরে এবতেদায়ী হওয়ার পর ওয়ান থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান শুরু হয়। খুরিয়ে খুরিয়ে চলতে চলতে ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সাংসদ আলহাজ¦ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল ক্দ্দুুস এমপির সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি আবার চালু হয়। বর্তমানে ওই মাদরাসায় ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৭০জন শিক্ষার্থীদের সরকারের সকল নিয়মনীতি অনুসারোন করে পাঠদান করাচ্ছেন এবং প্রতি বছরই সন্তোষ জনক ফলাফল লাভ করে আসছে।

আলীপুর দাখিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, বছরের ৮ মাস এই প্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো সম্ভব হয়না। কেননা বিদ্যালয়ের মাঠে প্রায় এক মাজা পানি হয়ে থাকে। তারপরও দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর যাবৎ আমরা ২০ জন শিক্ষক-শিক্ষীকা বিনা বেতনে মাদরাসার শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে আসছি। আমাদের অনেক আশা ছিলো গত বছর সবার সাথে আমাদেরটাও এমপিও ভুক্তি হবে। কিন্তু গত বছরেও আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হয়নি। আর কতদিন এভাবে বিনা বেতনে পাঠদান করাবো। আমাদের সংসার তো আর চলে না। ভেবেই পাচ্ছি না এখন আমরা কি করবো। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়। তারপর স্থানীয় সাংসদ সদস্য আলহাজ¦ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস এমপি মহোদয়ের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি ২০০১ সালে দাখিল পাঠ দানের অনুমোতি পায়। ২০০১ সালে টিআর কর্তৃক একটি অনুদান দিয়ে মাদরাসটির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সাংসদ এবং আমাদের নিজেদের নিরলস পরিশ্রমে আমরা প্রতিষ্ঠানটিতে বিনা বেতনে পাঠ দান করাচ্ছি। সরকার নন এমপিও প্রতিষ্টান এমপিও ভুক্তির জন্য গত ৫-৮-১৮ থেকে ২০-৮-১৮ পর্যন্ত ১৫ দিন সময় নির্ধান করে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন পক্রিয়া শুরু করার পর পরই আমরা আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এমপিও ভুক্ত হয়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ দিন যাবৎ আলীপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক কর্মচারিগণ বিনা বেতনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সকল নিতিমালা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করে আসছে এবং ভাল প্রতিবছরই সন্তোষ জনক ফলাফল লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত না হওয়ার কারনে শিক্ষক-কর্মচারীরা এখন হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। তারপরও বিদ্যালয়ে জলাবদ্ধতার কারনে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান ব্যাহত হয়।

মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বড়াইগ্রাম উপজেলা আ-লীগের দপ্তর সম্পাদক মোঃ শাহআলম মাস্টার জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পায় না। তারপরও বছরের প্রায় ৮ মাস জলাবদ্ধতা হয়ে থাকে। এ কারনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহত হয়। প্রতিষ্ঠানটি এমপিও করে প্রতিষ্ঠানে একটি বিল্ডিং করে দিলে এলাকার সাধারণ ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারতো।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধবড়াইগ্রামে বিয়ে না দেওয়ায় যুবকের আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধবেদনার বারো মাস – আবু জাফর সিদ্দিকীর কবিতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে