দুর্মুখী
কবি মাহফুজা আরা পলক
কখনো সময় নষ্ট ঘড়ির কাঁটার মতো স্তব্ধ হয়ে যায়,
কোন কথা আসে না,কলম চলে না,
মনের গহীনে হিম ধরা অজানা সংশয়!
নিশুতিরাতে ঘুমন্ত নগরে শুনশান নীরবতা
অশরীরী সুর তুলে- ব্যর্থ সমাজের পরতে পরতে
জমে থাকা কঠিন দাগের ন্যায় সকল অপারগতা।
চাকচিক্যের খোলসের আড়ালে আবদ্ধ
পঁচা দুর্গন্ধময় কিছু মনুষ্য অবয়বের বিবেক শূন্যতা
রাহুর গ্রাসে যখন নব প্রজন্মে ছত্রাক ছড়ায়
অথবা প্রযুক্তির জুয়াচুরিতে শৌন্ড হয়ে
উচ্ছন্নে যাওয়া অংকুরিত বীজ গুলো
লতিয়ে উঠার শক্তি হারিয়ে অবশেষে,
পান্ডু রোগীর মতো হলদে বর্ণ ধারণ করে
নিস্তেজ হতে হতে শয্যাশায়ী হয়।
দুর্মুখী আমিও অসার হয়ে রাতের আঁধারে অশ্রু ঝরাই।
মনেহয়- আলোর দিশারী প্রমিথিউসের কলজে
ভক্ষণের স্বাদ নিতে ধূর্ত ঈগল নিত্য ঠোকর বসায়
নব প্রজন্মের তরতাজা বক্ষে,
বিনাশী দেহে দিনমান নব্য প্রাণের জাগরণ ঘটিয়ে
নিশীথে হই ক্লান্ত।
চারিপাশ বড় অচেনা ঠাহর হয়,
চিরচেনা সমাজে ওঁৎ পাতা শ্বাপদের ভয়!
অতি আধুনিক যুগের নাগপাশে নাভিশ্বাস উঠা সময়
টুটেছে অতীতের যৌথ পরিবারের আশ্রয়।
অন্তরের অস্থিরতায় চিত্তের বৈকল্য বাড়িয়ে যায়,
একটা রেনেসাঁর প্রয়োজন খুব বেশি আজ
পদাতিকের পায়েও অস্থির সময়ে মন্থর চাল,
মুক্তি নেই!
যুগের লকারে বাক্সবন্দী বিবেক- ভুলে গেছে সত্যের পরিচয়
বুজরুকির রঙিন মোড়কে চেকনাই ঠিকরে নব প্রজন্মের
ভিতরে অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়ে রয় মূল্যবোধের সঁচয়।
ব্যর্থ প্রয়াশে অনুক্ষণ কলম চালাই
স্থবিরতা গ্রাস করে আমায় আষ্টেপৃষ্ঠে।
সময়ের কাছে সমর্পিত হয়ে যান্ত্রিক জীবনে
ব্যথাতুর হৃদয় নিংড়ানো গড়িয়ে পড়া অশ্রুতে উপলব্ধি হয়
আজো মানুষ হয়ে বেঁচে আছি অনুভূতিহীন সমাজে।।
১৮.০৮.২০২১