তোমার বিরুদ্ধে
দেবাশীষ সরকার
তোমার সন্দেহ বাতিক মনের বিরুদ্ধে আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারি জানো! জানো, শত শত পুরুষ কণ্ঠে ঝড়ে পরতে পারে হুঙ্কার, তোমার অভিমানী চিত্তের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়তে পারে রাজপথে! গুলিও চলতে পারে শাসকের বন্দুক থেকে! ঝড়ে পড়তে পারে কোন অভাগা পুরুষের বুকের তাজা রক্ত! তোমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন কিংবা স্মারকলিপি দেওয়া হতে পারে, তা-কি তুমি জানো!
তোমার সন্দেহের তীর বিদ্ধ হয়ে, এই আমি, কবি হয়েও যেতে পারি, রাতের পর রাত জেগে বিদ্রোহানলে জ্বলে পুড়ে রচনা করতে পারি নতুন কোন মহাকাব্য! রাজনীতির সবুজ মাঠে হুঙ্কার তুলে ফোটাতে পারি রক্তজবা! ঘর ছেড়ে আবিষ্কারের নেশায় নতুন কোন গ্রহে উড়াতে পারি বিজয় নিশান।
তুমি কি চাও? তোমার অবহেলা অনাদরের রক্তাক্ত ছায়া মাড়িয়ে হয়ে উঠি আমি নিষ্ঠুর খুনি! হয়ে যাই শ্বাপদের বিষবাষ্পে ভরা এই জনপদে যমের দোসর। তুমি কি চাও? অমানুষের খোলস ছেড়ে রাতরাতি বদলে যাওয়া সময়ের সাথে সাথে হয়ে উঠি বর্ণচোরা সন্ন্যাসী?
আমিতো তোমার আদরে আহলাদে সবুজ হতে চেয়েছিলাম!চেয়েছিলাম হতে উর্বরা জমির কৃষক। যে কিনা সুখ খুঁজে নেবে সোনালী ধানের রঙে, পালভরা গরুর গোয়ালে, দুধের ভাড়ায়, মাছের পুকুরে অথবা সবজির বাগানে। পূর্ণিমার আলোয় শরীর ভিজিয়ে আকাশে মুখ লুকাতে, বর্ষায় মরা নারদের বুকে যৌবন দেখে দেখে সুখ খুঁজে নিতে..।
মুক্তি
দেবাশীষ সরকার
শুকনো খটখটে নদীর কি এক ফোটা বৃস্টির জল আশা করতেও দোষ ! তলাটাও যার শুকিয়েছে বহুকাল হয়! ওখানে এখন নিয়ম করে আসে জল, বছরে ২-১ মাস, ব্যাঙাচিরাও বাঁচে না, পুড়ে যায় আগুনের তাপে। কঠিন শব্দের পাশে কিছু কিছু ধ্বনি- বর্ণরা কাঁদে, সহজ আবেগ আবেশে।
কতো অস্ত্র জমা দিচ্ছে কতো জনে! তবু অবুঝ শিশুর গলা কেটে যায় হিংসার আগুনে, রঙের রঙ গন্ধ ব্যাবহার হয় আতঙ্কের উন্নয়নে। সময়ের বহমানতায় উলুবনে স্থান হয় কবিতা অথবা কবির।
রোদেলা বনগ্রামে গড়ে মন, গড়ে মানুষ, চাষ হয় সবুজের, ওরা বন্দি বিহঙ্গ উড়ায় মুক্ত বাতাসে আকাশে। মেঠো পথ, জেলের জাল, কৃষকের খেত, কামারের হাতুড়ি আজ বড় অসহায় ওরাও এখানে মুক্তি চায়…..মুক্ত বাতাসে…
কবি র কবিতা
দেবাশীষ সরকার
আজকে কবিদের কবিতা পড়তে পড়তে ঝাপসা হচ্ছে চোখ। চারেদিকে হাহাকার, না পাওয়ার বেদনায় অস্থির হৃদয়ের আহাজারি। কেউবা একধাপ এগিয়ে প্রতিশোধের হুংকারের চোখ রাঙানি। হা হা হা হা ঠুনকো আবেগের চচ্চড়ি, অযথাই হালকা কমেন্টসের ছড়া ছড়ি, কবিদের কবিতা আজ প্রেমের প্যানপ্যানানি, রাজনৈতিক সমসাময়িকতার আলোয় পংক্তির বাড়াবাড়ি।
একটি কবিতা লেখো না কবি! শব্দের মায়াজালে কেটে যাবে দুপুর-বিকেল- সন্ধ্যে – রাত- ভোর।
চেতনার আকাশ জুড়ে আমি ছুটে বেড়াবো এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। দু’চোখ জুড়ে নেমে আসবে রাজ্যের ঘুম! আমি সেই ঘুমের অনাবিল আকাশে আঁকবো রক্তের হলুদ রঙ, সবুজ চোখের জলের নীল আলো, আর তোমার- আমার ঘামের লাল সুবাস।