নাটোরের জয় সহ বাংলাদেশী ২৩ নাবিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে

0
100

নাটোর কন্ঠ : কেএসআরএম কোম্পাণীর বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ নাটোরের বাগাতিপাড়ার জয় মাহমুদ নামে একজন স্ক্রুসহ ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে জিম্মি হয়েছেন।

স্ক্রু জয় মাহমুদ বাগাতিপাড়া উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের সালাইনগর গ্রামের মো. জিয়াউর রহমানের ছেলে। ২০০০ সালের ২৮ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহন করেন জয় মাহমুদ। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে এমভি আব্দুল্লাহ নামের বাংলাদেশী ওই জাহাজ ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিক সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

এদিকে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ওই জাহাজের স্ক্রু জয় মাহমুদসহ ২৩ বাংলাদেশী সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পেয়ে বাগাতিপাড়ার সালাইনগর গ্রামে জয় মাহমুদদের বাড়িতে শোকের মাতম শুরু হয়। বাড়ির সদস্য প্রায় সময় তার সাথে যোগাযোগ রাখেন। মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার সময়েও জয় মাহমুদের সাথে কথা হয়েছে তার মায়ের।

জয় মাহমুদের চাচাতো ভাই মারুফ হোসন জানান, “মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার দিকে জয় ভাইয়া তার মায়ের সাথে শেষ বার কথা বলেন। এর একটু সময় পর আমার ফোনে কথা হয় জয় ভাইয়ের সাথে। তখন তিনি আমাকে জলদস্যুদের কবলে পড়ার কথা জানায়।

পরে সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে ভাইয়া আমাকে হোয়াটস অ্যাপে বার্তা লিখে জানায়, তাদের মেবাইল কেড়ে নিচ্ছে জলদস্যুরা। এরপর আর কথা বলা যায়নি। আমরা জয় ভাইয়ের কোম্পাণীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি শেষ খবর জানার জন্য।’’

জয় মাহমুদের মা মোছাঃ আরিফা বেগম বলেন, “মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার দিকে কথা বলার সময় জয় জানায় তারা আফ্রিকার মধ্যে রয়েছে। আমাকে বলে সে ভাল আছে। আমার বাছা ২০২১ সালে জাহাজে চাকরীতে যোগ দিয়ে ট্রেনিং নিয়ে ছুটিতে বাড়িতে আসে। এর পর সে জাহাজে যায়। জাহাজে যাওয়ার প্রায় ৪ মাস হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই তার সাথে কথা হয় জয়ের। জয়েরা দুই ভাই-বোনের মধ্যে জয় মাহমুদ বড়।’’

জয় মাহমুদের পিতা জিয়াউর রহমান বলেন, “তারা আজ রাত ৯টার দিকে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন তার ছেলেসহ জাহাজের সবাই জলদস্যুদের কবলে পড়েছে। তিনি সরকারের কাছে তার ছেলে সহ আটকা পড়া সকল স্ক্রুদের সুস্থ ও জীবিত উদ্ধার করার আবেদন করেন।’’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মজিবর রহমান বলেন, “জয় মাহমুদ সহ এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের ২৩ স্ক্রু জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর যখন আমরা জানতে পেয়েছি, তখন থেকে এলাকার মানুষ অজানা আশংকায় সময় কাটাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাই আটকা পড়াদের যেন সুস্থভাবে উদ্ধার করা হয়।’’

উল্লেখ্য, ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ নামে বাংলাদেশি একটি জাহাজকে দখলে নিয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। এস আর শিপিংয়ের অধীনে পরিচালিত জাহাজটিতে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত-

আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। পরে প্রায় শতাধিক জলদস্যু জাহাজটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সোমালিয়া উপকূলের দিকে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন এক নাবিক।

জিম্মি অবস্থায় থাকা ক্যাপ্টেনসহ ২৩ নাবিকরা হলেন, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার মোঃ আতিক উল্লাহ খান, দ্বিতীয় অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, মোঃ তারিকুল ইসলাম, মোঃ সাব্বির হোসাইন, এ এস এম সাইদুজ্জামান, মোঃ তৌফিকুল ইসলাম,

মোঃ রোকন উদ্দিন, তানভির আহমদ, আইয়ুব খান, ইব্রাহিম খালিদ উল্লাহ, মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক, মোঃ আসিফুর রহমান, মোঃ সাজ্জাদ হোসাইন, জয় মাহমুদ, মোঃ নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মোহাম্মদ আলী হোসাইন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মোঃ শফিকুল ইসলাম,

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন ও মোহাম্মদ সালেহ আহমদ। তাদের মধ্যে জয় মাহমুদ নাটোরের বাগাতিপাড়ার এবং ১১ জনের বাড়ি চট্টগ্রামে। আর অন্যদের বাড়ি ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, খুলনা, নেত্রকোনা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধলালপুরে তাফসীরুল কোরআন মাহফিল ও সমাপ্ত ছাত্রদের পাগড়ী প্রদান
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে দু’দল এসএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে মারামারি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে