রাজু আহমেদ, স্ট্যাফ রিপোর্টার : উত্তরবঙ্গের শস্যভান্ডার খ্যত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় প্রায় ২৩০০০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদকৃত ও উৎপাদনকৃত রোপা আমন ধানের সিংহভাগই উদ্বৃত্ত উৎপাদন হিসেবে দেশের সার্বিক খাদ্য মজুদের পরিমানকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
কিন্তু বিগত বেশ কয়েকবছর যাবৎ আকস্মিক আগাম বন্যা ও চলনবিল তথা সিংড়া অঞ্চলের জনজীবন যেন একই সুতায় গাঁথা মালা হয়ে দেখা দিয়েছে। এই বন্যা স্বাভাবিক জনজীবনকে বিপর্যস্ত ও দূর্বিসহ করে তোলার পাশাপাশি সমগ্র উপজেলার কৃষি প্রতিবেশকে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এবারো এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
শুধুমাত্র বন্যাজনিত জলাবদ্ধতার দরুন প্রায় সকল ইউনিয়নেই রোপা আমনের বীজতলা উল্লেখযোগ্য হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে চাষাবাদ কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আপদকালীন ভাসমান বীজতলা তৈরীতে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার ১১ নং ছাতারদিঘী ইউনিয়নের কুমিড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক জাহেদুল ইসলামের বীজতলা পরিদর্শন শেষে তাঁর সাথে কথা হয়।
প্রতিনিধেকে তিনি জানান, সরকারী প্রণোদনার আওতায় ব্রিধান-৩৪ জাতের ৪ বেডের (১০মিটার * ১.২৫ মিটার) একটি আপদকালীন ভাসমান বীজতলা তৈরী করেছি। বন্যার পানি নেমে যাবার সাথে সাথে তিনি তাঁর জমিতে রোপা আমন শুরু করবেন।
এবিষয়ে ছাতারদিঘী ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মেসবাউল আরেফীনের সাথে কথা বললে তিনি জানান যে, বন্যাপ্রবণ এলাকা হবার কারণে বিগত কয়েক বছর যাবৎ কৃষকবান্ধব বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূখী লক্ষ্য বাস্তবায়নে উপজেলা কৃষি অফিসারের নির্দেশনায় প্রণোদনা ও কৃষক উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে তৈরীকৃত ভাসমান বীজতলা ব্যপকভাবে সাড়া ফেলেছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি জনপ্রিয়তা পাবে এবং সম্প্রসারিত হবে। সে লক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ বছর বন্যায় বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। বিশেষ করে উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের মাধ্যমে সরকারের প্রণোদনার সহায়তায় ১৩ টি ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এতে করে কৃষকরা উপকৃত হবে। অদূর ভবিষ্যৎ এ বন্যা প্রবণ এলাকায় এসব বীজতলা আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।