নাটোরে ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে সংবাদ সম্মেলন

0
459

বড়াইগ্রাম, নাটোর কণ্ঠ:

দীর্ঘ ১৮ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত নাটোরের বড়াইগ্রাম এর আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আয়নাল হক হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয় গত ২১ সেপ্টেম্বর। রায় ১১ জনকে খালাস দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে পরিবারের সদস্যদের। তারা এ রায় কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। এ বিষয়ে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তারা। এ সময় আয়নাল হকের পুত্র আওয়ামী লীগ নেতা বনপাড়া পৌর মেয়র কে এম জাকির হোসেন তার লিখিত বক্তব্যে বলেন-

“হতাশা ভারাক্রান্ত মনে আপনাদের নিয়ে আজকের এই আয়োজন। আপনারা জানেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর/২০২০ বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, মাঝগাঁও ইউনিয়নের বার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, বনপাড়ার সকল স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও ধমর্ীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শহীদ ডা. আয়নাল হক হত্যা মামলার রায় ঘোষনা করা হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায়ে জীবিত ১৩ আসামীর মধ্যে ১১ জনকে বে-কসুর খালাস দিয়ে মাত্র ২ জনকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ ১৮ বছর অপেক্ষায় ছিলাম দোষীরা শাস্তি পাবে আমরা উপযুক্ত বিচার পেয়ে শান্তনা খঁুজবো। এমন রায়ে আমরা (পরিবার, বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগ, বনপাড়াপৌর আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা, সকলসহযোগি সংগঠন, পেশাজীবি ও সুশিলসমাজসহ সর্বস্তরের জনগণ) চরম ভাবে হতাশ ও বিষ্মিত। এ বিষয়ে বুধবার রাষ্ট্রপক্ষ থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে। উচ্চ আদালত সুবিচার নিশ্চিত করবেন বলে পরিবার ও বড়াইগ্রামবাসীর প্রত্যাশা।

আপনারা জানেন, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ রাত পৌনে নয়টার দিকে বনপাড়া সাহেব পাড়ার ডাঃ আনছারুল হকের চেম্বার থেকে পুত্রবধু নাজমা বেগমকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলে ওঠার সময় থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলমসহ স্থানীয় বিএনপি ১৭ নেতা কমর্ী তার ওপর চড়াও হয়। এসময় তাকে রামদাসহ ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতারি আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে তার চ্যাম্বারের সামনে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ২৯ মার্চ দুপুরে তিনি মারা যান। এঘটনায় নিহতের পুত্রবধু নাজমা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলম, সাহের উদ্দিন মোল্লাসহ ১৭ বিএনপি নেতা -কমর্ীকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে একই দিনে তারা মহিষভাঙ্গা ডা. আয়নাল হকের গ্রামের বাড়িসহ, বনপাড়া, দিয়ারপাড়া, কালিকাপুর, নটাবাড়িয়া এলাকায় তার নিকটাত্নীয়সহ আওয়ামীলীগ দলীয় নেতা-কমর্ীদের শতাধিক বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট চালায়। তাদের বঁাধার কারনে ডা. আয়নাল হকের তিন ছেলেসহ স্বজনরা লাশ দাফনে অংশ নিতে পারেননি। ডা. আয়নাল হক একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই পুলিশ প্রহরায় লাশ দাফন করা হয়। যা তৎকালিন স্থাণীয়-জাতীয় পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় ফলাও ভাবে প্রচার হয়েছে। এঘটনায় ২০০২ সালের ১৫ অক্টোবর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাদার-অব-হিউমিনিটি দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বনপাড়ায় আসেন এবং ডা. আয়নাল হকের কবর জিয়ারত, স্মরণ সভা ও পরিবারকে শান্তনা দেন। তিনি ঘোষনা দিয়েছিলেন এর সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার তাই করবেন। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্থদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এখন এই বিচারকে যথার্থ করতে ডা. আয়নাল হকের পরিবার ও বড়াইগ্রামবাসীর প্রাণের দাবী ও আকুল আবেদন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির প্রতি সুদৃষ্টি দেবেন। ”

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক প্রতিমন্ত্রী নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, ডা. আয়নাল হকের সহধমর্ীনি জাহানারা বেগম, বড়ছেলে বনপাড়া পৌর মেয়র ও সভাপতি, বনপাড়া পৌর আওয়ামীলীগ কেএম জাকির হোসেন, বড় পুত্রবধু ও মামলার বাদী নাজমা বেগম, মেজছেলে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর এলাকা পরিচালক কেএম জামিল হোসেন, ছোট ছেলে বড়াইগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রভাষক কেএম জিল্লুর হোসেন, মেয়ে আসমা হক শাপলা, জামাতা জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব উন্নয়ন সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। উপজেলা আওয়ামীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস প্রেস, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক প্রভাষক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, বনপাড়া পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাইসচেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুরাইয়া আক্তার কলি, জেলা পরিষদ সদস্য মৌটুসি আক্তার মুক্তা, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শামসুল হক, মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের বেপারী, টিসিসিএ লিমিেিটেড এর চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক মোঃ ওয়াজেদ আলী সোনার, বড়াইগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও বনপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওয়াছেক আলী সোনার, অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, মাজেদুল বারী নয়ন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সকল কার্যকরী কমিটির সদস্যবৃন্দ। এছাড়া বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র আব্দুল রাবেক সরদার, জোয়াড়ী ইউপি চেয়ারম্যান চাঁদ মাহমুদ, বড়াইগ্রাম ইউপি চেয়াম্যান মোঃ মোমিন আলী, জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তোজাম্মেল হক, নগর ইউপি চেয়ারম্যান মোছাঃ নিলুফার ইয়াসমিন, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সালাম খান, চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনিসুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ খোকন মোল্লা, মোঃ শামসুজ্জোহা সাহেব, বনপাড়া পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, বড়াইগ্রাম পৌর ও সাত ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি-সম্পাদক, ও ইউপি সদস্য, উপজেলা আওয়ামীলীসহ সকলসহযোগি সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ।

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে পাঁচটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ আন্তঃজেলা চোর চক্রের ২ সদস্য আটক
পরবর্তী নিবন্ধবাংলার নদী মাঠ – আসাদজামান এর কবিতা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে