মেরিন সাহেব : লাইব্রেরি ভবন বা হল রুম যাই বলো আমাদের সময় এটা হল রুমই ছিলো।আহেদ স্যার আর মেয়েদের আঁকা ছবি রুমে টানানো ছিলো। ২০০৩ তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ ঘোষণা করলো আমি মনে মনে ভাবলাম গাছ কই লাগাবো আমারতো নিজের কোন জায়গা নেই আর তখন হানিফ স্যার ছিলেন যিনি প্রধান শিক্ষিকার রুমের সামনের গোল চত্তরে ও পুরো স্কুলেই ঋতু ভেদে গাছ লাগাতেন এবং সেগুলোর যত্ন নিতেন। মনে মনে ভাবলাম স্যারের ও same problem হতে পারে তাই স্যারকে অনুসরণ।
চিন্তায় এলো এমন একটা গাছ লাগাবো যেন বড় হয়ে এসে স্মৃতি রোমন্থন করতে পারি।হানিফ স্যার কে জানালাম স্যার খুশিতে বাক-বাকুম, সেই সাথে স্যারের মনের একটা খায়েশের কথা জানলাম সেটা হলো বয়েস স্কুলে ক্রিসমাস ট্রি আছে, আমাদের নেই, আমি যেন পারলে সেটারো ব্যবস্থা করি, আদেশ শিরোধার্য।
ক্লাসের সবাইকে জানালাম সবাই এককথায় রাজি হয়ে টাকা তুলে দিলো। স্মৃতিময় করতে আমার কাকুর ক্যামেরা আনলাম, গাছ আনলাম রেলওয়ে কলোনি থেকে, কিছু গাছ স্যার ও কিনে এনেছিলেন। প্রধান শিক্ষিকাও বেশ খুশি। তারপর গাছ লাগানো হলো বকুল গাছ, তোলা হলো ছবি । কাঠাল চাপা, রংগন সহ আরো ১০ টা গাছ আর স্যারের শখের সেই ক্রিসমাস ট্রি।
যতদিন ছিলাম প্রায় প্রতিদিনই সেই গাছ গুলোর কাছে যেয়ে কথা বলতাম, ভাবতাম বড় হয়ে গেলে যতদুরেই যাই এসে দেখে যাবো তাদের, আর যাওয়া হয়নি, কথা রাখাও হয়নি গতবছর একবার গিয়ে দেখলাম সে বেশ বড় হয়েছে।
গাছ লাগানোর ২ দিন পরের ঘটনা হানিফ স্যারের মন খারাপ, স্যার কি হয়েছে? গোল চত্তরে স্যার, আর বলিস না আমার আহ্লাদের সেই ক্রিসমাস ট্রি চুরি হয়ে গেছে, ভীষণ মন খারাপ হয়েছিলো সেই একটা দৌড় দিলাম আমার বকুল গাছের কাছে, ঊফফ আছে তাকে আর নেয়নি চোর।
স্মৃতি রোমন্থনে -মেরিন সাহেব।