বাগাতিপাড়ায় নিয়ন্ত্রণহীন মাংসের বাজার! নিরব উপজেলা প্রশাসন

0
727
Beef

সেলিম রেজা বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে মাংসের বাজার। ইচ্ছেমত দাম হাকাচ্ছেন মাংস বিক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ করলেও তাতে কোনো সমাধান মিলছে না। গত ঈদুল ফিতরে গরু, মহিষ ও খাশির মাংসের দাম বেঁধে দিলেও এবার কেন মূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছেন না এমন প্রশ্নে উপজেলা প্রশাসন দায়সারা জবাব দিয়েছেন। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাগাতিপাড়ায় বেশ কিছু অসাধু মাংস ব্যবসায়ী ক্রেতাদের জিম্মি করে ইচ্ছেমত দাম হাকাচ্ছেন। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ঘোষণা দিচ্ছেন একরকম আর বিক্রি করার সময় নিচ্ছেন তার চেয়ে বেশি। উপজেলার বেশ কয়েকজন বিক্রেতা এমন স্বেচ্ছাচারিতা করলেও প্রশাসনের উদাসীনতায় তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। বাগাতিপাড়া পৌরসভার লক্ষণহাটী মহল্লার মাসুম রেজা বলেন, তাদের এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার অদূরে লালপুর উপজেলার আব্দুলপুরেই প্রতি কেজি চার শত পঞ্চাশ টাকায় গরু অথবা মহিষের মাংস কিনতে পাওয়া যায়। অথচ বাগাতিপাড়ায় পাঁচ শত পঞ্চাশ টাকা গুনতে হয় ক্রেতাদের। প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা থাকলে অসাধু ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম নিতে পারতেন না বলে দাবি করেন তিনি। দয়ারামপুর এলাকার জাকারিয়া দাবি করেন, বাগাতিপাড়া উপজেলার বৃহত্তম বাজার দয়রামপুর। এই বাজারের প্রায় নিয়মিতই গরু এবং মহিষের মাংস বিক্রি হয়। বিক্রেতারা মাইকিং করে প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি করেন। এদিকে মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে যে সকল পশু জবাই করা হয়, সেগুলো সুস্থ কিনা তাদেখে প্রাণিসম্পদ ডাক্তাররা প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার কথা। অথচ ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাইয়ের প্রমাণ মিলেছে সরেজমিনে গিয়ে। শনিবার (২৪মে) সকালে উপজেলার সোনাপুর বাজারের মাংস বিক্রেতা মোকাদ্দেস ডাক্তারের সার্টিফিকেট দেখাতে পারেনি। মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে যে পশু জবাই করা হচ্ছে তা সুস্থ রয়েছে কিনা এবং তা দেখভালের দায়িত্ব উপজেলা প্রাণিসম্পদের আছে কিনা এমন প্রশ্নে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এবিএম অালমগীর বলেন, যে সকল পশু জবাই হবে তা সুস্থ কিনা পরীক্ষা করে প্রত্যয়ন পত্র নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তাই প্রত্যেকটি ইউনিয়নে ডাক্তারদের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। কিন্তু অনেক ব্যবসায়ী আমাদেরকে না জানিয়ে গোপনে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করেন। আর এগুলো বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাই। বিষয়টি নিয়ে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাব এর বাগাতিপাড়া উপজেলা শাখার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম তপু বলেন, মাংস বিক্রি করতে মাইকে একরকম ঘোষণা দিয়ে তার চেয়ে বেশি মূল্য রাখাটা ক্রেতার সাথে প্রতারণা শামিল। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মাংস বিক্রি, মূল্য তালিকা দৃশ্যমান জায়গাতে না লটকানো, অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি এবং ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত কোনো পদক্ষেপ বা দুর্বল বাজার মনিটরিং এর কারণেই উপজেলায় একই অপরাধ বারবার সংগঠিত হচ্ছে। অসাধু বিক্রেতার মাধ্যমে ক্রেতারা বারবার ক্রেতা প্রতারিত হলেও কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না এমন প্রশ্নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, কিছু জটিলতা রয়েছে যার কারণেই আমরা বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কাজ করতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধনাটোরে ১০০জন অসহায় কর্মহীন মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করল শিক্ষিত তরুণ সমাজ
পরবর্তী নিবন্ধনাটোর জেলায় ৯জন করোনমুক্ত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে