‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’

0
490
কদম

মো. মিরাজুল শেখ : বঙ্গাব্দের ১৪২৮ আষাঢ় মাসের প্রথম দিন। আনুষ্ঠানিক ভাবে আবির্ভাব প্রিয় ঋতু বর্ষার। এই মাসের মধ্য দিয়ে সাধারণত বাংলার প্রকৃতিতে যুক্ত বর্ষা আকাশে ঘণ মেঘ, ভোররাতে শেয়ালের ডাক, কদম কেয়ার গন্ধে ঘুম ভাঙ্গে মানুষের।

ব্যাঙের পেকপেকানি ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়।এই বর্ষা ঋতু মানুষের ভিতরে ঘুমিয়ে থাকা কবিত্ব ভাব জাগিয়ে তোলে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘আষাঢ় কবিতায় বলেছেন, ‘বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর, আউশের ক্ষেত জলে ভরভর, কালি-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিয়েছে দেখ্ চাহি রে।

ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে’। আষাঢ় বাংলা সনের তৃতীয় মাস। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে জুন-জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আষাঢ় মাস। আষাঢ় নামটি এসেছে পূর্বাষাঢ়া ও উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে। এমাসে প্রচুর বুষ্টি হয়।

গ্রীষ্মের দাবদাহ শেষে আষাঢ়ের বাদর ধারার ছোঁয়ায়, বাংলার প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পায়। নতুন আনন্দে জেগে উঠে প্রকৃতি। গ্রীষ্মের রুদ্র প্রকৃতির গ্লানি আর জরাকে ধুয়ে মুছে প্রশান্তির মুগ্ধতায় ভরে তোলে বর্ষা। আর বাঙালি মননে সবচেয়ে বেশি রোমান্টিকতা-আধ্যাত্মিকতার সুর বেজেছে এই বর্ষায়।

বাংলা কাব্যে তারই প্রতিফলন ঘটেছে নানা ভাবে। বহুকাল আগে কালিদাস তাঁর ‘মেঘদূত’ কাব্যে বর্ষা বন্দনা করেছিলেন এভাবে ‘আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবসে মেঘমাসৃষ্টসানুং বপ্রক্রীড়াপরিণতগজ প্রেক্ষণীয়ং দদর্শ। আরও আগে বৈষ্ণব কবি বিদ্যাপতি লিখেছিলেন- এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর।এ ভরা ভাদর মাহ ভাদর শূন্য মন্দির মোর…।

গ্রীষ্মের খরতাপে অতিষ্ঠ প্রাণকে শীতলতা দানে জুড়ি নেই বর্ষাকালের। প্রকৃতি প্রেমিক মানুষের কাছে তাই বর্ষা নিয়ে আসে অভিনব ব্যঞ্জনা। আর কবিদের ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। গানে-কবিতায় বাংলার কবিরা করেছেন বর্ষা-বন্দনা।

তাই ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ দিয়ে প্রণয় নিবেদন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কাছে বর্ষাকে মনে হয়েছে ‘বাদলের পরী’। তিনি লিখেছেন- রিমঝিম রিমঝিম ঘন দেয়া বরষে কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে…

Advertisement
পূর্ববর্তী নিবন্ধশ্রাবণ বন্দনা -কবি শ্রাবণী গুপ্ত‘এর কবিতা
পরবর্তী নিবন্ধনাটোরে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ১৫ মামলা ২২ হাজার টাকা জরিমানা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে